বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৪ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
সালথায় পারিবারিক কলহে পাশবিকতার শিকার ২২ দিনের শিশু

সালথায় পারিবারিক কলহে পাশবিকতার শিকার ২২ দিনের শিশু

স্বদেশ ডেস্ক:

ফরিদপুরের সালথায় বিরোধে জেরে পাশবিকতার শিকার হয়েছে ২২ দিনের এক শিশু। মায়ের কোলেও তার নিরাপত্তা জোটেনি। মাসহ তাকে ছুড়ে ফেলে নির্মমভাবে আঘাত দেয়া হয়েছে নরম শরীরের মাথা, পা ও ঠোঁটে। এতে প্রায় ছয় ঘণ্টা শিশুটির স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ভর্তি করা হয়েছে ফরিদপুরের বিশেষায়িত শিশু হাসপাতালে।

এ ঘটনায় শিশুটির মা এবং তার নানীকেও নির্মমভাবে আঘাত করা হয়। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করা হয়। ঘটনার পর থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার ১০ দিন পরেও থানায় মামলা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া গ্রামের এসকেন্দার মোল্লার সাথে তারই আরেক ভাই সেকেন্দার মোল্লার সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ওই ঘটনা ঘটে।

এসকেন্দার মোল্লার স্ত্রী আরজু বেগম (৩৭) লিখিত অভিযোগে বলেন, ১৬ আগস্ট একটি ছাগল ছানা প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়াকে কেন্দ্র করে সেকেন্দার মোল্লার স্ত্রী শাফি বেগম (৫০) তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তিনি এর প্রতিবাদ করলে শাফি বেগমের ছেলে মেহেদি হাসান (৩০) তার ওপর হামলা চালায়। তারা তার মাথার চুল ধরে টেনে-হিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দিয়ে এলোপাতারি কিল-ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে। এরপর লোহার হাতুড় দিয়ে তাকে পেটায়। মাকে এভাবে মারতে দেখে কোলে শিশু বাচ্চাকে নিয়েই তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যান তার মেয়ে ইশা (২২)। তখন তাকে সজোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলে শিশু সন্তানসহ দুরে ছিটকে পড়েন তারা। এতে শিশুটি পাকা সিমেন্টের শানের ওপর আর তার মা ইশা তার থেকে দুরে আরেক জায়গায় ছিটকে পড়েন। শিশুটির মল বের হয়ে যায় ওই সময়, তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। পায়ে এবং ঠোঁটেও জখম হয়। তার শ্বাস-প্রশ্বাস প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে। শিশু বাচ্চাকে ফরিদপুরের জাহেদ মেমোরিয়াল শিশু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানান, তার মাথায় আঘাত লেগেছে। এছাড়া আহত আরজু বেগমকে ফরিদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়।

ও ঘটনার পর আরজু বেগম সালথা থানায় সেকেন্দার মোল্যা (৫৫), মেহেদী হাসান (৩০) ও স্ত্রী শাফি বেগমের (৫০) বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

আরজু বেগম জানান, তারা ওই ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

শিশুটির মা ইশা বলেন, ‘সন্তান পেটে থাকতেই চাচী বলতেন যে আমার ছেলে নাকি পেট থেকে পঁচে-গলে বের হবে। আর এখন বাচ্চা জন্ম নেয়ার পরপরই তারা আমার বাচ্চাটিকে আঘাত করেছে। জানিনা, এর কারণে ওর আরো কোনো ক্ষতি হবে কি-না।’

এসকেন্দার মোল্লা বলেন, ‘আমার মৃত্যুর আগেই তার ভাতিজা তার সম্পত্তির আবছা পাবে বলে সকলকে বলছে। আর আমার মৃত্যুর আগেই তারা আমার সম্পত্তির আবছা হিসেবে জমি দখল করে রেখেছে।’

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সাদিক বলেন, ‘এ ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। প্রাথমিক সত্যতা যাচাইপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877